পশ্চিমবঙ্গ দেশ ব্যবসা প্রযুক্তি বিনোদন খেলা জ্যোতিষ গাড়ি লাইফস্টাইল আবহাওয়া সম্পাদকীয়

---Advertisement---

ভক্তির আড়ালে শতাব্দীপ্রাচীন আইনি লড়াই—দক্ষিণেশ্বর মন্দির আসলে কার?

By Desk
On: December 13, 2025 1:57 PM
Follow Us:
---Advertisement---

কলকাতা:

কলকাতার ঐতিহাসিক দক্ষিণেশ্বর শ্রীশ্রী কালীমন্দিরের মালিকানা নিয়ে বহু বছর ধরে আইনি লড়াই চলছে। রানি রাসমণির মৃত্যুর পর মন্দিরের সম্পত্তি ও পরিচালনা অধিকার ঘিরে তাঁর উত্তরাধিকারীদের একাংশ এবং মন্দির ট্রাস্টের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়।

এই মামলা বিভিন্ন সময়ে আদালতে উঠলেও এখনও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি। বর্তমানে দক্ষিণেশ্বর মন্দির ট্রাস্টই মন্দিরের প্রশাসনিক দায়িত্বে রয়েছে। তবে মালিকানা সংক্রান্ত আইনি জটিলতা থাকায় বিষয়টি মাঝেমধ্যেই আলোচনায় আসে।

আইনগত প্রশ্ন: মূল জট কোথায়?

এই মামলার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি প্রশ্ন—

. মন্দির কি ব্যক্তিগত সম্পত্তি, না পাবলিক ট্রাস্ট?

আইন অনুযায়ী,

• যদি মন্দির পাবলিক রিলিজিয়াস ট্রাস্ট হিসেবে স্বীকৃত হয়, তবে ব্যক্তিগত উত্তরাধিকারীদের সরাসরি মালিকানা দাবি করার সুযোগ সীমিত।

• কিন্তু যদি প্রমাণ হয় যে এটি ব্যক্তিগতভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং উত্তরাধিকারীদের নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা ছিল, তবে দাবি জোরদার হয়।

এই প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করে ঐতিহাসিক দলিল, দানপত্র, ট্রাস্ট ডিড ও দীর্ঘদিনের প্রথার ওপর।

. ট্রাস্টের ক্ষমতা কতটা বৈধ?

দক্ষিণেশ্বর মন্দির ট্রাস্ট বর্তমানে মন্দিরের দৈনন্দিন পরিচালনা, পুজোপাঠ, উন্নয়ন ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে।

আইনি বিশেষজ্ঞদের মতে, আদালত সাধারণত দেখে—

• ট্রাস্ট কি নিয়ম মেনে গঠিত?

• ট্রাস্ট কি জনস্বার্থে কাজ করছে?

• দীর্ঘদিন ধরে ট্রাস্ট পরিচালনা মেনে নেওয়া হয়েছে কি না?

এই বিষয়গুলো ট্রাস্টের পক্ষে শক্ত যুক্তি তৈরি করে।

. সময়ের প্রভাব (Doctrine of Limitation)

আইনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সময়সীমা বা Limitation

যদি দীর্ঘ সময় ধরে ট্রাস্ট পরিচালনা চলে এবং সেই সময় কোনও কার্যকর আইনি আপত্তি না ওঠে, তাহলে উত্তরাধিকারীদের দাবি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। আদালত অনেক ক্ষেত্রে “দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থা” বজায় রাখতে চায়।

আদালতে মামলার গতি

এই মালিকানা মামলা বিভিন্ন পর্যায়ে আদালতে শুনানির মুখোমুখি হয়েছে। মাঝে মাঝে শুনানি হলেও চূড়ান্ত রায় এখনও হয়নি। ফলে আইনি অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।

আইনজ্ঞদের মতে, এই ধরনের ধর্মীয় সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলায় আদালত সাধারণত হঠাৎ কোনও র‍্যাডিকাল সিদ্ধান্ত নেয় না। বরং ভক্তদের স্বার্থ, ঐতিহ্য ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখার দিকেই ঝোঁক থাকে।

ভক্ত ও প্রশাসনের ওপর প্রভাব

বর্তমানে এই আইনি বিতর্কের প্রভাব মন্দিরের দৈনন্দিন পুজো বা দর্শনে পড়ছে না। তবে দীর্ঘমেয়াদে—

• মন্দিরের উন্নয়ন পরিকল্পনা

• বড় সংস্কার প্রকল্প

• সম্পত্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত

এসব ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

Join WhatsApp

Join Now

Join Telegram

Join Now

Leave a Comment