চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে শুরু হওয়া বিশ্বের প্রথম “ওয়ার্ল্ড হিউম্যানয়েড রোবট গেমস” শুধু প্রযুক্তির উৎসব নয়, বরং এটি প্রতিবেশী ভারতকে একটি বড় প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে—রোবোটিক্স ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় (AI) প্রতিযোগিতায় ভারত কতটা প্রস্তুত?
ভারতের বর্তমান অবস্থান
• ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রোবোটিক্স গবেষণা বাড়ছে, বিশেষত আইআইটি ও আইআইএসসি বেঙ্গালুরুতে।
• স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে ইতিমধ্যেই ড্রোন, সার্ভিস রোবট ও হেলথকেয়ার রোবট নিয়ে কাজ হচ্ছে।
• তবে মানবাকৃতি (Humanoid) রোবট ক্ষেত্রে ভারত এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে। চীনের তুলনায় বিনিয়োগ, গবেষণাগার ও শিল্প সহায়তা কম।
ভারতের জন্য সুযোগ
1. যুবশক্তি ও আইটি দক্ষতা – ভারতীয় তরুণদের প্রোগ্রামিং ও AI দক্ষতা বিশ্বে অন্যতম সেরা। যদি এই শক্তি রোবোটিক্সের সাথে মেশানো যায়, তাহলে দ্রুত অগ্রগতি সম্ভব।
2. স্টার্টআপ বুম – ভারতে ১ লক্ষের বেশি স্টার্টআপ আছে। সরকারি সমর্থন পেলে এখান থেকে বহু রোবোটিক্স ইনোভেশন বের হতে পারে।
3. আন্তর্জাতিক সহযোগিতা – জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর সাথে যৌথ গবেষণায় ভারত অনেক কিছু শিখতে পারে।
চ্যালেঞ্জ
• অর্থায়নের ঘাটতি: গবেষণায় পর্যাপ্ত সরকারি বিনিয়োগ নেই।
• শিল্পের সীমিত আগ্রহ: বড় কোম্পানিগুলো এখনো রোবোটিক্সকে “ভবিষ্যতের প্রযুক্তি” হিসেবে দেখে, তাৎক্ষণিক ব্যবসায়িক সুযোগ নয়।
• ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও হার্ডওয়্যার দুর্বলতা: ভারতে সফটওয়্যার দক্ষতা থাকলেও উন্নত হার্ডওয়্যার (চিপ, সেন্সর) উৎপাদন সীমিত।
চীনের সঙ্গে তুলনা
• চীন এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিশ্বকে দেখাতে চাইছে প্রযুক্তিগত নেতৃত্ব।
• ভারত এখনো রোবোটিক্সকে মূলত শিক্ষামূলক ও সীমিত শিল্প প্রয়োগে সীমাবদ্ধ রেখেছে।
• তবে ভারতের AI গবেষণা ও সফটওয়্যার ক্ষমতা চীনের সমানতালে এগোচ্ছে, যা ভবিষ্যতে হিউম্যানয়েড রোবটের মস্তিষ্ক তৈরি করতে কাজে আসতে পারে।
ভারতের জন্য করণীয়
• জাতীয় রোবোটিক্স নীতি: স্টার্টআপ, বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পকে যুক্ত করে একটি দীর্ঘমেয়াদি কৌশল দরকার।
• ফান্ডিং বাড়ানো: সরকার ও বেসরকারি খাত থেকে বড় পরিমাণে গবেষণার তহবিল গঠন।
• শিক্ষা ব্যবস্থায় রোবোটিক্স: স্কুল পর্যায় থেকেই প্রোগ্রামিং, AI ও রোবোটিক্স শেখানো বাধ্যতামূলক করা।
• আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ: চীনের মতো মঞ্চে ভারতীয় রোবটও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে বিশ্ব বাজারে ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি হবে।
⸻
🔎 সারকথা:
বেইজিংয়ের এই রোবট গেমস ভারতের কাছে একটি জাগরণের সংকেত। ভারত যদি এখন থেকেই বিনিয়োগ ও কৌশলগত পরিকল্পনা নেয়, তবে ২০৩০-এর দশকেই চীনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে আসতে পারে রোবোটিক্স জগতে।











