পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া নিয়ে ফের তীব্র রাজনৈতিক টানাপোড়েন। নির্বাচন কমিশনের “স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (SIR)” ইস্যুতে এবার মুখোমুখি হলো তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেস। এর ফলে রাজ্যের বিরোধী ঐক্য ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, নির্বাচন কমিশন যে নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে রয়েছে বহু গরমিল ও অনিয়ম। দলের অভিযোগ—“হাজার হাজার প্রকৃত ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, আবার অনেক ভুয়ো নাম তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।” তৃণমূলের মতে, এই প্রক্রিয়া “পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র”, যা ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটারদের অধিকার হরণ করার চেষ্টা।
অন্যদিকে, কংগ্রেস এই ইস্যুতে তৃণমূলের মতো কড়া অবস্থান নেয়নি। দলটির বক্তব্য—“ভোটার তালিকা আপডেট করা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ, তবে নির্বাচন কমিশনকে স্বচ্ছতা ও সঠিক সময়ে কাজ শেষ করতে হবে।” ফলে স্পষ্ট, এই প্রশ্নে দুই বিরোধী দল এখন ভিন্ন পথে হাঁটছে।
⚖️ রাজনৈতিক মহলের বিশ্লেষণ
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কংগ্রেসের এই অবস্থান ইচ্ছাকৃতভাবে সংযত। তারা রাজ্যে তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে চাইছে না। অন্যদিকে তৃণমূল এই ইস্যুতে সরাসরি মুখোমুখি সংঘর্ষের পথে যেতে প্রস্তুত।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, “যদি এই ইস্যুতে বিরোধী দলগুলির মধ্যে ঐক্য না থাকে, তাহলে তার লাভ উঠিয়ে নিতে পারে বিজেপি।”
📅 আগামী দিনগুলোতে কী হতে পারে
- তৃণমূল এই ইস্যু নিয়ে রাজ্যজুড়ে আন্দোলনের পথে নামতে পারে।
- কংগ্রেস নিজেদের অবস্থান আরও স্পষ্ট করতে বাধ্য হবে।
- নির্বাচন কমিশনের উপর বাড়তে পারে চাপ—ভোটার তালিকা সংশোধনে স্বচ্ছতা দেখাতে হবে।
- ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ইস্যুই হয়ে উঠতে পারে রাজ্যের রাজনীতির সবচেয়ে বড় বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু।
📣 তৃণমূলের বার্তা
তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, “এইভাবে ভোটার তালিকা পরিবর্তন করা মানে গণতন্ত্রের ভিত্তি নাড়িয়ে দেওয়া।” দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন,
“যে মানুষরা বছরের পর বছর এই রাজ্যে বসবাস করছেন, তাদের নাম হঠাৎ করে তালিকা থেকে উধাও—এটা কি স্বাভাবিক? আমরা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামব।”
🗳️ কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া
অন্যদিকে, রাজ্য কংগ্রেসের এক নেতা জানিয়েছেন,
“ভোটার তালিকা হালনাগাদ হওয়া জরুরি। তবে কোনও গরমিল থাকলে নির্বাচন কমিশনকে তা ঠিক করতে হবে। রাজনীতি নয়, আমরা চাই সঠিক প্রক্রিয়া।”

শেষ কথা
পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক অঙ্গনে SIR নিয়ে এই বিরোধ নতুন সমীকরণ তৈরি করছে। ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে এই বিতর্ক যে আরও উষ্ণ হবে, তা বলাই বাহুল্য।







